সুজলা-সুফলা, কানন-কুমত্মলা, নদী-মেখলা বীর প্রসবিনীর দেশ এই চট্টলা। কথিত আছে, চট্ট না জাগলে হট্ট হয় না। সমুদ্র পথে সুদুর দিলস্নী থেকে পীর আউলিয়াদের সমাগম হতো এই চট্টলায়। সেজন্যই চট্টগ্রাম পূর্ণ্য তীর্থ ভূমি। চট্টগ্রামকে অনেক নামে অভিহিত করা হয়। ইসলামাবাদ থেকে চাটিগাঁ কিংবা চাটিগাম(চাটি মানে ছোট, গাম মানে স্থান) অপভ্রংশের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে চট্টগ্রামে এসে স্থায়ী অবস্থান নিয়েছে তা কিন্তু না, ইংরেজীতে চিটাং বা চিটাগং নামেও বেশ পরিচিত।
চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্রে পরীর পাহাড় নামে খ্যাত কোর্ট বিল্ডিং বা আদালত ভবনের পশ্চিম অংশে কমিশনার বস্নগে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার অফিসের অবস্থান। বলা বাহুল্য, চট্টগ্রাম বিভাগের মাঠ পর্যায়ে সর্বোচচ গুরম্নত্বপূর্ণ এবং উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন অফিস হল বিভাগীয় কমিশনার অফিস। এ অফিসকে মাঠ প্রশাসনের সচিবালয়ও বলা হয়ে থাকে। হাত-দুহাত দূরত্বে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। পেছনে নতুন আদালত ভবনে জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ আরো অন্যান্য অফিস রয়েছে। এই বিল্ডিং এর সংষ্কার কাজের জন্য বিগত ----- /০৫/২০১৩ তারিখ পর্যমত্ম ৭১৮ চট্টেশ্বরী রোডে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের অস্থায়ী অফিস ছিল। লালচে এই পুরাতান আদালত ভবনের স্থাপত্তের অনন্য নিদর্শন পাওয়া যায়। অসাধারণ কারম্ন কাজ, ফ্রন্ট ভিউ, ব্যাক ভিউ, পরিমান মতো দরজা-জানালা, বিশাল করিডোর সত্যি সবাইকে এক চমকে মুগ্ধ করে। মতামত্মরে ১৮৮৪ সালে এই বিল্ডিং এর কাজ শুরম্ন হয়(কলকাতা রাইর্টাস বিল্ডিং এর কাজও এই সময়ে শুরম্ন)। অগ্নিপুরম্নষ, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বিপস্নবী, মাস্টার দা সূর্যসেনের ফাঁসির রায় ঘোষিত হয় এই আদালত ভবন থেকে। শুধু তা নয়, ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, স্বাধীনতার মহান নায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দালদীঘির পাড়ে ৬ দফা ভাষণ শেষে তিনি এই ভবনের স্থাপত্তের নিদর্শন দেখতে এসেছিলেন।
কখন কোন সময় চট্টগ্রাম বিভাগ গঠিত হয়েছিল তার সঠিক ইতিহাস জানা যায়নি। এক সময় বাংলাদেশের নাম ছিল বঙ্গদেশ। বঙ্গদেশ বিহার-উড়িষ্যা নিয়ে গঠিত ছিল। ভারত বর্ষ বিভাগের পূর্বে বর্দ্ধমান, প্রেসিডেন্সী, রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম ৫টি ভাগে বিভক্ত ছিল। ১৮২৯ সালে(দি বেঙ্গল রেভিনিউ কমিশনারস্ রেগুলেশন) কালেক্টরের আদেশের বিরম্নদ্ধে আপিল শুনানির জন্য সার্কিট হাউজে বিভাগীয় কমিশনারের হাতে কেবল রাজস্ব এবং ফৌজদারী বিষয়ক আপিল শ্রবণের ক্ষমতা রাখা হয়। তাছাড়া এ অফিসের কমিশনার মহোদয়ের কক্ষের অর্নার বোর্ডে ১৮২৯ সালে এ বিভাগের প্রথম কমিশনার হিসেবে MR. NATHANIEL JOHN HALHED, ESQRএর নাম পাওয়া যায়। এর থেকে কিছুটা হলেও আমরা ধারণা পেতে পারি ১৮২৯ সালই হল চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার অফিস সৃষ্টি হওয়ার পটভূমি।
এক সময় সিলেট বিভাগের চারটি জেলাসহ(সিলেট, হরিগঞ্জ, মৌলভী বাজার ও সুনামগঞ্জ) এ বিভাগের অধীনে ১৫টি জেলা ছিল। ১ আগস্ট, ১৯৯৫ তারিখ সিলেট বিভাগ হিসেবে এ বিভাগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। বর্তমানে এ বিভাগের অধীনে ১১টি জেলা রয়েছে। জেলা গুলো হলঃ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, কুমিলস্না, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস